Header Ads

ডিসির সাথে কথা বলার অপরাধে ইউএনও পিটালেন এক যুবককে ( ভিডিও)

নওগাঁ : নওগাঁর পোরশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফিরোজ মাহমুদের বিরুদ্ধে নিজ অফিস কক্ষে আটকে রেখে এক যুবককে মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে মো. আমানুল্লাহ নামের ওই আজ সোমবার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নিতপুর ইউনিয়নের বৈদ্যপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে আমানুল্লাহ জমিজমা সংক্রান্ত জটিলতার বিষয়ে সমাধান চাইতে গতকাল রোববার দুপুরে ইউএনও ফিরোজ মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান। এ সময় ইউএনও আমানুল্লাহকে সাক্ষাৎ দিতে অনীহা প্রকাশ করেন। এ সময় ওই যুবক ইউএনও অফিসের বারান্দায় দাঁড়িয়ে বিষয়টি মুঠোফোনে তাঁর পরিচিত বড় ভাই সুজন মাহমুদকে বিষয়টি জানান। ওই ব্যক্তি বিষয়টি শুনে ইউএনওর সঙ্গে কথা বলতে চান এবং মুঠোফোনে ইউএনওকে ধরিয়ে দিতে বলেন। আমানুল্লাহ মুঠোফোনে সুজনের সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ করলে ইউএনও তাঁর হাত থেকে নিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেন। পরে আবার ওই যুবক সুজনকে ঘটনাটি জানালে তিনি তাঁকে ইউএনও অফিসের আশপাশ থাকতে বলে নওগাঁ জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানায়। কিছুক্ষণ পর ইউএনও আমানুল্লাহকে তাঁর অফিসে ডেকে নিয়ে তাঁর সমস্যা সম্পর্কে বিস্তারিত শুনেন এবং তাঁর সমস্যার সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। ইউএনওর সঙ্গে কথা বলে ওই যুবক তাঁর কক্ষ থেকে বের হয়ে যান। অফিস কক্ষ থেকে বের হয়ে বাড়ি যাওয়ার জন্য পোরশা উপজেলা পরিষদ চত্বর পার হওয়ার আগেই ইউএনও পেছন থেকে ডাক দিয়ে তাঁর কক্ষে যেতে বলেন। ইউএনও ডাকে সাঁড়া দিয়ে ওই যুবক তাঁর কক্ষে ঢুকতেই দরজা বন্ধ করে ওই যুবককে ঝাড়– দিয়ে মারপিট করতে শুরু করে। পরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলামের মধ্যস্ততায় ওই যুবককে ছেড়ে দেন ইউএনও। এ বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে জেলে পাঠাবেন বলে আমানুল্লাহকে ইউএনও ফিরোজ মাহমুদ হুমকি দেন বলে ওই যুবক অভিযোগ করেন।
নির্যাতনের শিকার যুবক আমানুল্লাহ বলেন, ‘আমার বাবা আমাদের ভাই-বোনদের নামে তাঁর কিছু জমি-জমা লিখে দিয়েছেন। সম্প্রতি তিনি আমাদের নামে লিখে দেওয়া কিছু জমি অন্য মানুষের কাছে অন্যায়ভাবে বিক্রি করে দেন। এ ধরণের আরও কিছু জমি মানুষের কাছে বিক্রি করার জন্য তিনি পাঁয়তারা করছেন। আমাদের নামের সম্পত্তি যাতে অন্যের নামে নামজারি না হয় সেজন্য ইউএনও সাহেবের সঙ্গে রোববার সাক্ষাৎ করতে যাই। প্রথমে তিনি আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাননি। কিন্তু আমি রাজশাহীর পরিচিত বড় ভাই সুজনের সহযোগিতা নিয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করি এবং ঘটনা খুলে বলি। কথা বলে চলে যাওয়ার সময় পেছন থেকে ডেকে নিয়ে রুমে আটকে রেখে তিনি আমাকে মারপিট করেন। পরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসে তিনি আমাকে ছেড়ে দেন। আমি এর বিচার চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাক্ষাৎ করতে চাননি এ কথা ডিসিকে কেন জানিয়েছি এজন্য তিনি আমাকে মারপিট করেছেন। মারপিটের ঘটনা নিয়ে পরে বাড়াবাড়ি করলে তিনি আমাকে জঙ্গি বানিয়ে জেলের ভাত খাওয়াবেন বলে হুমকি দেন। এখন আমি আতঙ্কের মধ্যে আছি।’
বিষয়টি সম্পর্কে পোরশা জানতে চাইলে পোরশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আমার জানামতে সেখানে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে সামান্য বিষয় নিয়ে ইউএনওর সঙ্গে আমানুল্লাহ নামের একটি ছেলের কথাকাটাকাটি হয়। আমি জানার পরে দুজনের মধ্যে বিষয়টি মিটমাট করে দিয়েছি।’
অভিযোগের বিষয়ে ইউএনও ফিরোজ মাহমুদের সঙ্গে কথা বলার জন্য তাঁর মুঠোফোন নাম্বারে বার বার কল করলেও তিনি ফোন ধরেন নাই।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান বলেন, ‘এ ধরনের একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ইউএনও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.