Header Ads

মহাদেবপুরে মাদ্রাসার মাঠে রাস্তার নির্মাণ সামগ্রী রেখে কাজ

মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি : 

নওগাঁ : মহাদেবপুর উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের ‘চৌমাশিয়া রহমানিয়া দাখিল মাদ্রাসা’ মাঠ দখল করে রাখা হয়েছে রাস্তার কাজের নির্মাণ সামগ্রী। নির্মাণ সামগ্রীর ধুলাবালি আর কালো ধোঁয়া এবং বিটুমিনের তীব্রগন্ধে ক্লাস করা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। তীব্র কালো ধোঁয়ায় ওই এলাকা আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া নির্মাণ কাজেও অনিয়ম হচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) অধীনে উপজেলার চৌমাসিয়া থেকে মাতাজি সড়কের পুনে তিন কিলোমিটার মেজর মেইনটেন্স (পুনরায় মেরামত কার্পেটিংয়ের) কাজ করা হচ্ছে। এ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৮৩ লাখ টাকা। কাজটি পেয়েছেন নওগাঁ শহরের ‘ইথেন এন্টারপ্রাইজ’। আর সাব-ঠিকাদার হয়ে কাজটি করছেন নওগাঁ শহরের ঠিকাদার সাদেকুল ইসলাম। রাস্তায় কার্পেটিংয়ের কাজ শুরুর ১৫-২০দিন আগ থেকে মাদ্রাসার মাঠে নির্মাণ সামগ্রী বালু, পাথরের কুচি, বিটুমিনের ড্রাম রাখা হয়েছে। নির্মাণ সামগ্রীর ধুলাবালি এবং বিটুমিন গলানোর কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে কাঠ ও পুরনো জুতার তলা।


সরেজমিন দেখা গেছে, মঙ্গলবার (১৫ মে) মাদ্রাসাটি খোলা ছিল। আর জানালা-দরজা বন্ধ করে পাঠদান করতে হচ্ছে। মাদ্রাসার সামনে মাঠে বালু, পাথরের কুচি, বিটুমিনের ড্রাম ও পাথর-বালু মিশ্রণের জন্য প্লান্ট মেশিন বসানো আছে। বিকট শব্দে চলছে সেটি। কাঠ ও পুরনো জুতার তলা জ্বালিয়ে বিটুমিন গলানো হচ্ছে। তীব্র কালো ধোঁয়ায় ওই এলাকা আচ্ছন্ন হয়ে আছে। নির্মাণ সামগ্রীর ধুলাবালি আর কালো ধোঁয়া এবং বিটুমিনের তীব্রগন্ধে ক্লাস করা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। গত আটদিন থেকে চলছে তাদের এ কর্মযজ্ঞ।

রাস্তার কাজে পিকেট ইট (বেশি পোড়া কালো ইট) বেশি ব্যবহার করা হয়েছে। এসব ইটের উপর পিচ ঢালায় তেমন টিকে না। এছাড়া নি¤œমানের ইট ব্যবহার করায় রোলার করার সময় রাস্তার অনেক স্থানে ইটগুলো ধুলো হয়ে গেছে।

বাগধানা গ্রামের আফজাল ও আব্দুল খালেক বলেন, আগে রাস্তাটি পাকা ছিল। আগের তুলনায় এখন যে কাজ হচ্ছে তা অনেকটাই খারাপ। নি¤œমানের ইট ব্যবহার করা হচ্ছে। রাস্তার কাজ যা ইচ্ছে তাই করে চলেছে। যেন দেখার কেউ নেই।

মাদ্রাসার কৃষি শিক্ষক সোহেল রানা বলেন, প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী আছে প্রতিষ্ঠানে। গত ৭ দিনে উপস্থিতি ৫০ শতাংশের নিচে। আমার অ্যামজা আছে। ধুলা বালিতে সমস্যা। আগুনের প্রচন্ড তাপ, কালো ধোঁয়া ও জুতা পুড়ানো তীব্র গন্ধ এবং মেশিনের শব্দে স্কুলে থাকাই কষ্টকর হয়ে উঠেছে। পাঠদানেও মনযোগ পাওয়া যায়না। মাদ্রাসার দরজা-জানালা বন্ধ। তারপর কালো ছায়ে সবকিছু অপরিস্কার হয়েগেছে।

মাদরাসার সুপার রুহুল আমিন বলেন, আমাকে না জানিয়ে মাঠে মালামাল রাখা হয়েছে। গত কয়েকদিন থেকে বিকট শব্দে শিক্ষার্থীরা তেমন আসেনি এবং পাঠদানেও বিঘœ ঘটেছে। জানালা-দরজা বন্ধ করে পাঠদান করতে হচ্ছে। তারপর তীব্র গন্ধ ও শব্দে আমাদেরও সমস্যা হচ্ছে।

ঠিকাদার সাদেকুল ইসলামের ছেলে হারুন বলেন, এসব কাজ সাধারনত স্কুল মাঠগুলোতে রেখেই করা হয়ে থাকে। সব ঠিকাদারই এটা করে থাকেন। তবে সমস্যা একটু হতেই পারে। আর পিকেট ইট শিডিউইলে ২০ শতাংশের কথা বলা আছে। ইট বেশি পোড়ার কারণে গুনগত মান কমে যায়। তবে কাজে কোন ত্রুটি হচ্ছেনা।

মহাদেবপুর উপজলো প্রকৌশলী (এলজিইডি) রোজদিদ আহম্মেদ বলেন, ঠিকাদার ম্যানেজ করেই মাদরাসা মাঠে রাস্তার কাজের নির্মাণ সামগ্রী রেখেছে। শিডিউলে পিকেট ইট ব্যবহারের কথা উল্লেখ আছে। তবে কাজের কোন ধরনের অনিয়ম হচ্ছেনা।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.